এই লিংকে ক্লিক করলে বাড়ি বসে পেয়ে যাবেন, "দশে দশ" গল্প সংকলন।
http://sristisukh.com/ss_wp/product/%e0%a6%a6%e0%a6%b6%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%b6/?fbclid=IwAR08yJhrMXE6sQy01kjitrsscUDnSsmbjMU3KaN7ve2CE_T9age-wWiiX08
এই সংকলনের সপ্তম গল্প "উকুন"-এর কিছু অংশ
"....কাল
সন্ধের ঝোঁকে ঠিক যখন সেজেগুজে সে রেডি হচ্ছে, পাঁচু বদ্যি সুড়সুড় করে ঢুকে পড়েছিল
তার ঘরে। ব্যাটা একনম্বরের মেনিমুখো, অলক্ষুণে আর উনপাঁজুরে। বদ্যির নামে
ঢেঁড়াকাটি, মিনসে ক লিখতে কলমভাতে। জুতোর চামসে শুকতলার মতো মুখটা তেলপানা করে, সে
যখন বলে, আমি হলাম গে পাঁচকড়ি বদ্যি। সে রগড় বড়ো কম নয়। তাদের পাড়ায় হাসির হল্লা
ওঠে, মুখ খারাপের কল্লা ওঠে।
মাসী ঘরের চালে ঝোলা এত্তবড়ো কদুর মতো দুই বুক দুলিয়ে বলে – ওলো শোন লো
শোন, ভারেণ্ডাও বিরিক্ষি আর ত্যালাপোকাও পক্ষি। বদ্যি ব্যাটা যম হাতুড়ে, মিনসে বড়ো
মাগ কাতুরে। ব্যাটা ভদ্দরনোকের পাড়ায় কল্কে পায় না, তাই চলে আসে আমদের বগলতলায়,
আমাদের গা শুঁকতে।
পাঁচু
বদ্যি, বদ্যি হোক বা না হোক, ধুলিকে একবার যে যমের দোর থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিল সে
কথাটা সত্যি। আর তারপর থেকেই মুখপোড়া মিনসে তার ন্যাওটা হয়ে বারে বারে ফিরে আসে।
এত গাল খায়, নাতি-ঝ্যাঁটা খায় তবু হপ্তায় দু তিনবার তার আসা চাই। শ্যাওড়া ঝোপের ভুতের
মতো কেলে হাঁড়িপানা মুখে পাকা চালকুমড়োর বীজের মতো দাঁত বের করে কি তার হাসি।
দেখলে গতর রীরী করে। তবু এমন নেই আঁকড়ে দুনিয়ায় দুটো নেই। ঠিক সন্ধের ঝোঁকে আসে।
সঙ্গে আনে রুটি আর মাংসের ভাঁড়। সঙ্গে একটা বোতল। কালও এসেছিল। ঘরে ঢুকে টেবিলের
ওপর রুটির ঠোঙা আর ভাঁড় রেখে, বোতল নিয়ে জাঁকিয়ে বসল এসে ধুলির বিছানায়। চুল
বাঁধছিল ধুলি, লাল ফিতের একটা প্রান্ত ধরেছিল দাঁতে, ঝেঁঝে উঠে বলেছিল-
‘আজও এসে পড়লি হাড় জ্বালাতে? হাভাতে মিনসে, বিছানায় বসেছে
যেন আমার সাতকেলে ভাতার। তোর জ্বালায় যে আমার রোজগার পাতি বন্ধ হবার যোগাড়, সে
কতাটা জানিস, মুখপোড়া’? পাঁচুবদ্যি তার মুখভর্তি
চালকুমড়োর দানা সাজিয়ে হাসল, বলল
‘বেশ
হবে, চুলোয় যাক তোর রোজগার পাতির ধান্দা। কতবার তোকে বলেচি বল, আমি তোকে পুষবো। তুই শুধু আমার...’
‘পুষবো,
হাঘরে মিনসে, আমি কি বেড়াল ছেনা নাকি চন্ননা পাকি? বলি মুরোদ আছে? বে’ করে তোর ঘরে
তুলতে পারবি’?
‘এ
কতাও তোকে কমদিন বলেচি, বল? যাবি তো চল, কালই তোকে বে করে নে যাবো। যাবি? আমার
সাতকুলে কেউ নেই, আর তোর সব থেকেও কেউ নেই, কিসের পিছটান বল দিকি’?
সারাটা
রাত কাটিয়ে, ভোর রাতে বেরিয়েছিল পাঁচু। কালরাতে ধুলির রোজগার বলতে পাঁচুবদ্যির
দেওয়া পঞ্চাশটা টাকা আর মদ রুটি মাংসের আধা বখড়া। বাজারের থলে আর ওই পঞ্চাশটা টাকা
নিয়ে ঘরের দরজায় শেকল তুলতে তুলতে ধুলির ঢেকার উঠল – মাংসের ঝোলের গন্ধ মাখা টক টক
জল, আক্খুটে মিন্সে কোন হোটেলের মাংস এনেছিল কে জানে, শালা টোকো ঢেকারে গলা
জ্বলে উঠছে ধুলির। মনে মনে অশ্রাব্য একটা গাল দিয়ে ধুলি উঠোনে নেমে হাঁক পাড়ল – ‘কোন
চুলোয় গেলি রে, বাসি। বাজারে যাবি বললি যে’?"
এই লিংকে ক্লিক করলে বাড়ি বসে পেয়ে যাবেন, "দশে দশ" গল্প সংকলন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন