("কিশোর বার্তা" পত্রিকায় প্রকাশিত)
(কোলের
কাছে বসে, চিংড়ি ভাজা দিয়ে ডালভাত মাখা খেতে খেতে,
দিদিমার
মুখে ছোট্টবেলায় যেমনটি শুনেছিলাম, এটা সেই গল্প – একটু আলাদা মোড়কে।)
ভোরের
আলো ফুটেছে অনেকক্ষণ, পুব আকাশে এখন মায়ের কপালে সিঁদুরের টিপের চেয়েও এত্তোবড়ো
সূর্য। তার রোদ্দুর একটু তেরছা হয়ে পড়ছে জামরুল গাছের পাতায় পাতায়। পাতা ভিজিয়ে
রোদ্দুর গড়িয়ে পড়ছে টুপ টাপ, পুকুরের জলে। চারদিকে গাছে ঘেরা এঁদো পুকুর। সবুজ জল,
খুদিপানায় ভর্তি। ঘাটের কাছে, মেয়ে বউরা বাসনকোসন মাজতে বসে, সেখানে জলটা একটু
পরিষ্কার। উল্টোদিকের পাড়ে যেখানে খুব গাছপালা আর আগাছার ঝাড়, সেখানে পাতার আড়ালে
বসে থাকে মাছরাঙা পাখি। আনমনে ছোট মাছেরা একটু ওপরের দিকে ভেসে উঠেছে কি, ঝপাং - মাছরাঙার
ঠোঁটে রূপোর ঝিলিক।
এদিকে
মাঝ পুকুর বরাবর কিছু শালুকের ডগা জেগে আছে সাদা পাপড়ি মেলে। আশেপাশে গোলগাল আসনের
মতো ভাসছে সবুজ পাতা। খুব
হাল্কা হলে, জল থেকে উঠে বসাও যায় ওই পাতায়। যেমন আজ সকালে এসে এইমাত্র বসল, চিংড়িরাণি। সারাক্ষণ জলের মধ্যে থেকে তার চুল
শুকোয় না। আজ শালুকপাতায় বসে রোদ্দুরে পিঠ দিয়ে সে বসল চুল শুকোতে।
একটু
আরাম করার কি জো আছে? হতচ্ছাড়া এক কাক, কোথায় ছিল, উড়ে এসে বসল, কাছের তেঁতুল
গাছের ডালে। দুবার ডাকল, খা খা। সর্বদাই তার খাবার চিন্তা। ঘাড় ঘুরিয়ে এদিক দেখল,
ওদিক দেখল। তারপর তার চোখ পড়ল ছোট্ট চিংড়িরাণির ওপর। লোভে তার ঠোটঁ ফাঁক হয়ে গেল,
বলল,
‘চিংড়ি
লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে’!
কাকের
গলা পেয়ে, ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল চিংড়িরাণি। রাক্ষুসে
কাকের ফাঁক করা ঠোঁট দেখে চিংড়িরাণির ভয়ও লাগল খুব, আবার রাগে হাত-পাও জ্বলতে
লাগল। শালুক পাতার কানা থেকে তিড়িং করে লাফ মারল জলে। জলের মধ্যে ডুবে বেশ
নিশ্চিন্তি। ভয়টা তো কাটল, কিন্তু রাগ? সেটা তো কমছে না! আকাশের কাকের সঙ্গে জলের
চিংড়ির কী সম্পর্ক? চিংড়ি বুঝি ফ্যালনা, তাকে ‘তুই’ বলা যায়, ‘লো’ বলা যায়, আবার
টপ করে খেয়েও ফেলা যায়? রাগে সমস্ত শরীর রি রি করতে লাগল চিংড়ির। কী করা যায়, কী
করা যায়, ভাবতে ভাবতে চিংড়িরাণি গেল তার কাতলা দাদার কাছে।
কাতলাদাদা
আর বৌদি তখন খুব ব্যস্ত। কাতলাদাদা আপিস যাবে, বাচ্চারা যাবে স্কুল। বৌদি কাতলাদাদাকে খেতে দিয়েছে,
বাচ্চারাও সবাই খেতে বসে হই হট্টগোল করছে। কাতলাদাদা চিংড়িরাণিকে দেখেই বৌকে বলল,
‘কে
এয়েচে দেখো। আয় রে বোন চিংড়িরাণি, ওকে শিগ্গির
দাও পিঁড়ি-পানি’।
বৌদি বলল,
‘ও
মা ঠাকুজ্জি, এসো বোনটি, বোস বোনটি, এই নাও পানি, আর পিঁড়ি দিচ্ছি আনি’। কাতলা চিংড়িরাণির মুখের দিকে
তাকিয়ে বলল,
‘কিন্তু
বোন, বল তো দেখি কেন? তোর মুখটা ভীষণ ভার, মনে হচ্ছে যেন’।
কাতলাদাদার
কথায় ফুঁপিয়ে উঠে চিংড়িরাণি বলল,
‘সকাল
বেলায় চানটি করে কীই বা করি বল, শালুকপাতায় বসে তখন শুকোচ্ছি কুন্তল। কাকটা এল
উড়ে, বসল একটু দূরে। “চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে”! বললে আমায় কাক, আমায় খাবার
ঝোঁকে। কাক আমাকে খেত, সেও ভালো হত, কিন্তু ‘লো’ বলবে কেন? এই অপমান থাকতে তোরা, সইতে হবে হেন’?
চিংড়িরাণির
এই কথায় রেগে আগুন হয়ে উঠল কাতলাদাদা আর বৌদি। বলল,
‘হতচ্ছাড়া
কাকের এতোই আস্পর্দা, কাতলা যে তোর বড়দা, গেছেই বোধ হয় ভুলে। কানটি তাহার মুলে,
পাঠিয়ে দেবো খড়দা। এক কাজ কর তুই বোন, খারাপ করিস নে আর মন। এখন আমার ঘরেই থাক,
তোর বৌদি আছে যখন। আপিস থেকে আসছি আমি ফিরে, দেখব আমি তখন। কি ভাবে ঢিট হতে পারে
কাক বাছাধন’।
কাতলাদাদার
এই কথায় চিংড়িরাণি ভরসা করতে পারল না। রেগেও গেল খুব। আমি জ্বলছি কাকের কথায়,
কাতলাদাদা চলল নেকটাই ঝুলিয়ে আপিস করতে! আপিস থেকে ফিরতে হবে সন্ধে। ততক্ষণ কাক
বুঝি বসে থাকবে, কাতলাদাদার কাছে জব্দ হওয়ার জন্যে! প্রচণ্ড রাগে চিংড়িরাণি
থড়বড়িয়ে বেরিয়ে গেল কাতলাদাদার ঘর থেকে, কাতলাদাদা বলল,
‘কোতা
যাস, কোতা যাস, ও আমার বোন’। বৌদি
বলল,
‘ঠাকুজ্জি,
ঠাকুজ্জি, একবারটি শোন’।
কে
শোনে কার কতা? চিংড়িরাণি একদণ্ডও আর দাঁড়াল না। সোওওজা গেল শোলদাদার বাড়ি।
শোলদাদার বাড়িতে তখন খুব হট্টগোল। শোলদাদা নিজেই বাজায় ঢ্যাম গুড়গুড় ঢোল। বাদ্যি
থামিয়ে শোলদাদা বলল,
‘আয়
আয় বোন চিংড়ি, মুখটা কেন হাঁড়ি? সকাল সকাল কি হল রে, জানতে আমি পারি?’
চিংড়ি
খুব রাগে গনগনে মুখে বলল,
‘শালুকপাতায়
বসে আমি শুকোচ্ছিলাম চুল, সকাল সকাল সেইটা বুঝি, হল আমার ভুল? হতচ্ছাড়া কাক, করছিল
হাঁকডাক। “চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে”! বললে আমায় জেন। খেত তো ভালোই হত,
কিন্তু ‘লো’ বলবে কেন? এই কথাতেই হলাম আমি ভীষণ অপমান। বিহিত কিছু না করলে, দেবই
আমি প্রাণ’।
এই
কথা শুনে শোলদাদাও খুব রেগে গেল। নিজের লেজ ঝটপট করে বলল,
‘রাগ
হচ্ছে খুব। কাক ব্যাটাকে সঙ্গে নিয়ে জলেই দেব ডুব। ইচ্ছে হলেও, সত্যি সত্যি করতে
কি আর পারি? চল তো দেখি, আমার সঙ্গে কাঁকড়াকাকার বাড়ি। সেথায় গেলে বেরিয়ে যাবে,
একটা কোন উপায়। কী
করেই বা কাকব্যাটা, এমন বলতে সাহস পায়?’
শোলদাদার
সঙ্গে চিংড়িরাণি চলল, কাঁকড়াকাকার বাড়ি। কাঁকড়াকাকা, সকালে উঠে ব্যায়াম করছিল, ইয়া
মোটামোটা দাঁড়া ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। হন্তদন্ত হয়ে ওদের আসতে দেখে কাঁকড়াকাকা ব্যায়াম
থামিয়ে বলল,
‘আয়রে
আমার চিংড়ি, আয়রে আমার শোল। কিছু একটা নিশ্চয়ই হয়েছে গণ্ডগোল। সকাল সকাল নইলে কেন
আসবি তোরা বাড়ি? মুখটি দেখে মনে হচ্ছে, রেগে আছিস ভারি?’
কাঁকড়াকাকার
চেহারা দেখে চিংড়িরাণি অনেকটাই ভরসা পেল। সে হাঁফাতে হাঁফাতে বলল,
‘সকালবেলায়
রোদ্দুরটি উঠেছিল বেশ, শালুকপাতায় বসে আমি শুকোচ্ছিলাম কেশ। হঠাৎ এল কাক, ঠোঁটটি
করে ফাঁক। “চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে”, বললে আমায় কাক, লোভ চকচক চোকে’। খেত তো ভালোই হত, কিন্তু ‘লো’ বলবে
কেন? কেউ কোত্থাও নেই আমার, কোন স্বজন যেন?’
কাঁকড়াকাকা
এই কথা শুনে ভীষণ রেগে গেল। মোটামোটা দুই দাঁড়াতে শান দিয়ে বলল,
‘দাঁড়া,
চিংড়ি, দাঁড়া। দেখছিস এই দাঁড়া? চেপে এমন ধরব আমি কাকব্যাটার গলা, বন্ধ হয়ে যাবে
তার সকল কথা বলা। কাকব্যাটাকে কেমন করে করবো আমি বন্দী। সেটাই আসল ফন্দি। গায়ে
আমার বাঁধতো দেখি, আচ্ছা সে ব্যাণ্ডেজ। মনে হবে আঘাত পেয়ে, আমার ঝিমিয়ে গেছে তেজ’।
কাঁকড়াকাকার
কথা মতো শোল আর চিংড়ি, কাঁকাড়াকাকার গায়ে খুব চওড়া করে ব্যাণ্ডেজ বেঁধে দিল, শুধু
দাঁড়াদুটো খোলা রইল। ব্যাণ্ডেজ
বাঁধা হয়ে যাওয়ার পর তিনজনে গেল সেই শালুক পাতার কাছে। কাঁকড়াকাকা জল থেকে ভেসে
উঠে, শালুকপাতার ওপর চড়ে শুয়ে পড়ল চিৎপাত হয়ে। চিংড়ি আর শোল জলের মধ্যেই ভাসতে
থাকল কি হয় দেখার জন্যে। কাঁকড়াকাকাকে দেখে মনে হচ্ছিল, সত্যিই যেন খুব অসুস্থ,
সারা গায়ে মাথায় বেজায় চোট পেয়েছে।
দূর
থেকে দেখতে পেয়ে, কিছুক্ষণ পর কাকটা উড়ে এসে বসল কাছের তেঁতুল গাছের ডালে। দুবার
ডাকল, খা খা। সবসময়েই তার খাবার চিন্তা। ঘাড় ঘুরিয়ে কিছুক্ষণ দেখল কাঁকড়াকাকাকে।
কাঁকড়াকাকা নড়েও না, চড়েও না। কাকটা ধরেই নিল কাঁকড়াটা বুঝি মরে গেছে। তার কালো
কালো ঠোঁটদুটো লোভে ফাঁক হয়ে গেল। মনে মনে ভাবল,
‘আহা,
কাঁকড়া খাবার এমন সুযোগ পাই নি বহুদিন। ভাবতে আমার মনটি নাচে ধা ধা তাধিন ধিন। করলে
বেশি দেরি, জুটবে আরো কাক। আমার ভাগেই তখন পড়ে যাবে ফাঁক’।
এই
না ভেবে কাক উড়ে গিয়ে বসল শালুক পাতার ওপর। কাকের ভারে দুলে উঠল শালুকপাতা। জলের
ভেতর ঢেউ উঠল গোল গোল। খুদিপানার সবুজ পাতাগুলোও দুলে উঠল ঢেউয়ের তালে তালে। খুদিপানার
আড়ালে লুকিয়ে থাকা চিংড়ি আর শোল দম বন্ধ করে অপেক্ষা করতে লাগল, কী হয়, কী হয়!
কাঁকড়াকাকা কিন্তু একটু নড়েও নি, চড়েও নি। মরার মতো শুয়ে থেকে দুলতে লাগল
শালুকপাতার সঙ্গে। কাকটা এবার সরে এসে কাঁকড়াকাকার দু পাশে দুই পা রেখে দাঁড়াল,
এবার ঘাড় তুলে ঠোকর মারবে মনে হয়। ঠোকর মারার আগে শেষবারের মতো চারপাশটা ঘাড়
ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে নিল, কোথাও কোন বিপদ আছে কিনা। কিচ্ছু নেই, এবার কাকটা দুবার
ডাকল, খাই খাই। সর্বদাই
তার খাবার চিন্তা।
তারপর
কাঁকড়াকাকাকে ঠোকর মারতে কাকটা যেমনি মাথা নামিয়েছে, কাঁকড়াকাকা এক ঝটকায় দাঁড়া
দুটো দিয়ে, ক্যাঁক করে চেপে ধরল কাকের গলা। কাকটা ডানা ঝাপটিয়ে পালানোর জন্যে ছটফট
করছিল, কিন্তু কাঁকড়াকাকার দাঁড়ার কামড় ছাড়াতে পারলে তো! কাঁকড়াকাকা, এবার কাকের
গলা চেপে থেকেই, হাঁক দিল,
‘কোতায়
গেলি, চিংড়িরানি, কোথায় গেলি শোল? দৌড়ে এসে দেখে নে, খাচ্ছে কেমন ঘোল। কাকব্যাটা
হচ্ছে কেমন আমার হাতে জব্দ, মুখের থেকে শুনতে কী পাস কা কা কা শব্দ?’
চিংড়ি
আর শোল জলের মধ্যে থেকে সবই দেখছিল, এখন কাঁকড়াকাকার ডাকে শালুক পাতার ওপর উঠে এল
চিংড়ি, আর পাতার চারপাশে ঘুরে ঘুরে সাঁতার দিতে লাগল শোলমাছ। চিংড়ি বলল,
‘কেমন
রে, কাক আর কী আমায় খাবি, নাকি কাঁকড়াকাকার দাঁড়ার চাপে যমের দোরে যাবি?’
কাক
এতক্ষণে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারল, সকালে ‘চিংড়ি লো, চিংড়ি, খাবো লো তোকে’ বলার
জন্যেই, কাঁকড়া ব্যাণ্ডেজ বেঁধে মড়ার মতো শুয়েছিল শালুক পাতার ওপর, তাকে ধরবে বলে।
কাক বেকায়দায় পড়ে, এখন চোখ মটকিয়ে কোন রকমে বলল,
‘না,
না না, কাঁকড়াদাদা দাও গো এবার ছেড়ে, চিংড়ি খাবার বদবুদ্ধি ফেলেই দিলাম ঝেড়ে।
চিংড়ি খাবার ইচ্ছে আমি করবো না গো আর, দমবন্ধ হওয়ার আগেই দাও গো আমায় ছাড়’।
কাঁকড়াকাকা
রাগী দুই চোখে তাকিয়ে কাককে কড়া ধমকে দিল,
‘চিংড়ি
আমার ভাইঝি, রাখবি মনে কথা, কোনভাবেই চিংড়ি যেন, পায় না মনে ব্যথা। দিলাম এবার
ছেড়ে, পরের বারে করলে এমন, রাখবো তোকে সেরে। যা উড়ে যা গাছের ডালে করবি না
হাঁকডাক, এ পাড়াতে না দেখি আর, বুঝলি ব্যাটা কাক?’
কাঁকড়াকাকার দাঁড়া থেকে ছাড়া পেতেই কাক ঝটপট
উড়ে গিয়ে বসল জামরুল গাছের ডালে। সেখানে বসে অনেকক্ষণ নিজের গলায় হাত বোলালো।
কাঁকড়াটা যা জোর চেপে ধরেছিল, গলায় দাগ বসে গেছে, উফ, প্রাণটা গিয়েছিল আরেকটু হলে।
তারপর সেখান থেকেও সে উড়ে গেল কোথায় কে জানে।
কাঁকড়াকাকা
ব্যাণ্ডেজ খুলতে খুলতে বলল, ‘এখন খুশি তো, চিংড়িরাণি, আর তোকে ওই কাক; তোর
ব্যাপারে কোনদিন গলাবে না নাক’। পাতা
থেকে কাঁকড়াকাকা আর চিংড়িরাণি জলের মধ্যে ডুব দিল, তাদের সঙ্গী হল শোল। কাঁকড়াকাকা
বলল, ‘চিংড়িরাণি, শোল, আমার বাড়ি চল; আমি খাব চা, তোরা কী খাবি বল। রান্না করে বসে
আছে তোদের কাঁকড়াকাকি, চল এবারে সবাই মিলে কেমন হল চাখি’।
কাক
আর কাঁকড়াকাকার ঝটাপটিতে শালুকের পাতা খুব দুলছিল। আশপাশ থেকে দুলে দুলে দূরে সরে
গিয়েছিল খুদিপানার ছোট্ট ছোট্ট পাতা। জলের নিচে ওরা ডুব দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে
তারা আবার সরে এল, নিজেদের জায়গায়। এখন দেখে বোঝাই যায় না কিছু। খুদিপানার ছোট্ট
পাতায় ঢাকা পড়ে গেছে পুকুরের স্থির জল।
৩টি মন্তব্য:
আমার নাম মাধুরী হাজরা।
দাদা, কি বলব বুঝে পাচ্ছি না। এই গল্পটির খুবই খুবই সংক্ষিপ্ত সংস্করণ আমার দিদিমায়ের (আমরা তাঁকে দিদিমণি বলতাম) খুব ছোটবেলায় শোনা।
আমরা বড় নাৎনি এখন আমার কাছে শুনে বড় হয়েছে।
আপনার পুরো লেখাটি এখনো পড়ে উঠিনি। কিন্তু গল্পের নাম দেখেই তাড়াতাড়ি পুরোটায় চোখ বুলিয়ে নিয়েছি।
হুবহু এক সারাংশ।
আজ পর্যন্ত জীবনে কারুর মুখে এ গল্প শুনিনি বা এ জিনিস পড়িনি।
আমার দিদিমার নাম ছিল ঊষারাণী বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা আমহার্স্ট স্ট্রীটে, তাঁর পিতা যতদূর মনে পড়ছে - শ্রী প্রসাদ চট্তাঁটোপাধ্যায়)। তাঁর ভান্ডারে এই রকম অদ্ভূত অদ্ভূত গল্প ছিল। আর কোন ঠাকুমা দিদিমার মুখে এ জিনিস কখনো শুনিনি।
তাই জানতে চাইছিলাম, এই গল্পটির কি বহুল প্রচলন আছে আপনার অভিজ্ঞতায়? আশা করি কিছু মনে করলেন না। আমাদের দিদিমায়েরা কি ভাবে এই একই গল্প শুনে বড় হলেন - সেইটা বুঝতে, জানতে উৎসুক। (FB Madhuri Bonnerjee Hazra)
আর একটি প্রশ্নঃ গুরুচন্ডাঌতে কি আপনি “ধর্মাধর্ম” প্রবন্ধের রচয়িতা?
মাধুরীম্যাডাম,
গল্পটি বহুল প্রচলিত কিনা জানিনা, তবে আমিও এটি দিদিমার মুখে বাল্যকালে শুনেছিলাম, এখন আমি আমার কন্যাকেও গল্পটি শুনিয়ে থাকি। আমাদের দেশ বর্ধমান জেলায় - যদিও আপনাদের আমহার্স্ট স্ট্রিটের কাছাকাছি শ্রীগোপাল মল্লিক লেনে দীর্ঘ ২৪ বছর ভাড়া থাকতাম।
আমার দাদামশাই ছিলেন মুখোপাধ্যায়, শুনেছি দিদিমার পিতৃকূল ছিলেন চট্টোপাধ্যায়- অবশ্য তাঁরাও বর্ধমান জেলারই বাসিন্দা ছিলেন।
গুরুচণ্ডা৯তে ধর্মাধর্ম দীর্ঘ প্রবন্ধটি আমি লিখছি।
কিশোর ঘোষাল
Madhuri Hazra
ধন্যবাদ।
FBতে friend request পাঠিয়েছি। পরিচয় হয়ে ভাল লাগল। দিদিমায়ের আদি বাসস্থান কলকাতার আগে কোথায় ছিল জানি না।
আমি যতদূর জানি আমার দিদিমার সতাতো বোন ছিলেন রীণা (চট্টোপাধ্যায়) মুখোপাধ্যায়। তাঁর স্বামী ঁবিজয় মুখোপাধ্যায়। কোথায় থাকতেন কিছু জানি না।
আপনার সংগে যোগাযোগ রাখব যদি কিছু মনে না করেন। নমস্কার।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন