("দেশ" পত্রিকায় প্রকাশিত)
আর এখন এই লিংকে ক্লিক করলে বাড়ি বসে পেয়ে যাবেন, "দশে দশ" গল্প সংকলন।
http://sristisukh.com/ss_wp/product/%e0%a6%a6%e0%a6%b6%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%b6/?fbclid=IwAR08yJhrMXE6sQy01kjitrsscUDnSsmbjMU3KaN7ve2CE_T9age-wWiiX08
এই সংকলনের প্রথম গল্প "ক্ষতিপূরণ"-এর কিছু অংশ
....লাঞ্চের একটু আগে সাড়ে বারোটা
নাগাদ, ফটিক পাহাড়ের দিকে পিঠ করে বসে লম্বা সাজানো রডে চক দিয়ে মার্কিং করছিল।
তাকে এই মার্কিং দেখিয়ে দিয়েছে নিমাইদা – রড ফিটার। ছোটখাটো মাপজোক – মিলি, সেন্টি,
মিটার সে এখন বুঝতে পারছে – শিখে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। ছোট তিন মিটারের মেজারিং টেপ
দিয়ে সে এখন যেখানে যেখানে চকের দাগ দিচ্ছে, সেখান থেকে বেঁকিয়ে ফেলতে হবে রডগুলো।
ছত্রিশের মোটা রডগুলো তুলতে, নাড়াতে তিনজন হেল্পার লাগে – এত ভারি। অথচ একবার
বেন্ডিং মেসিনে বসালে ম্যাজিকের মতো বেঁকে যায় রডগুলো। এইসব কাজ দেখা ও শেখায় সে
বেশ মজা পাচ্ছে, নিজের ওপর বিশ্বাস তার বাড়ছে দিনকে দিন। সে এখন স্বপ্ন দেখে, সেও
বিশুর মতো অথবা নিমাইদার মতো একদিন হয়ে উঠতে পারবে মাতব্বর এক মিস্ত্রি।
মার্কিং করার কাজ হয়ে গেল।
নীচেয় যেখানে রড বাঁধার কাজ চলছে সেখানে নিমাইদা কিছু করছে, ফটিক দেখতে পেল। সে
চেঁচিয়ে বলল-
-‘নিমাইদা, মারকিন করে
দিইইচি’। নিমাই মুখ তুলে উপরের দিকে তাকাল। বলল-
-‘হয়ে গ্যাচে, আসতিসি দাঁড়া’।
এবং তার পরেই প্রচন্ড আতঙ্কে দু হাত ছড়িয়ে চেঁচিয়ে উঠল –‘পালা, পালা, ফটকে, সরে
যা, সরে যা...’।
ফটিক লক্ষ্য করল নীচেয় যারা
কাজ করছিল, সবাই এখন উপরের দিকে তাকিয়ে এলোমেলো ছোটাছুটি করে সরে যাচ্ছে যে যেদিকে
পারে। আর সবাই চিৎকার করছে ‘পালা, পালা, সরে যা...সরে যা..আ.আ..আ..’।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিমেষে সব
আলো নিভে গে্ল - অস্ফুট একটু শব্দ মিশে গেল বাতাসে। এই ঘটনার নির্বিকার সাক্ষী
হয়ে রইল মাথার ওপর নির্দাগ নীল আকাশ, উজ্জ্বল উষ্ণ রোদ, দুপাশের সুউচ্চ পীন পাহাড়,
গাছপালা-লতাগুল্ম। আতঙ্কিত অসহায় মানুষগুলো সন্তর্পণে উঠে আসতে লাগল উপরে,
প্রকৃতির হাতে মার খাওয়া আদিম মানুষের মতো।...
1 টি মন্তব্য:
শেষটা ভাল লাগল। যদিও পাঠককে ভাল লাগানোর দায় লেখকের না, তিনি লেখেন নিজের পছন্দমতই, তবে এই যে শেষে এসে একটা ভুল লোক ফটিকের মৃত্যুর ফায়দাটা তুলতে পারল না এটা পাঠকের জন্য একটা পুরষ্কার বটেই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন